প্রিন্স হ্যারিকেপিতৃপরিচয় নিয়ে গুঞ্জন ভয়াবহ কষ্ট দিয়েছে

প্রিন্স হ্যারিকেপিতৃপরিচয় নিয়ে গুঞ্জন ভয়াবহ কষ্ট দিয়েছে
রাজা তৃতীয় চার্লসের সন্তান নন প্রিন্স হ্যারি এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। এমন গুঞ্জন বছরের পর বছর ধরে হ্যারিকে ভয়াবহ কষ্ট দিয়েছে। সম্প্রতি আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সাপ্তাহিক নিউজ ম্যাগাজিক নিউজউইকের খবরে বলা হয়, ৬ জুন আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় দ্য ডিউক অব সাসেক্স (হ্যারি) বলেছেন, তাঁর আশঙ্কা, তাঁকে রাজপরিবার থেকে ‘সরিয়ে দিতে’ যুক্তরাজ্যের ট্যাবলয়েডের সাংবাদিকেরা তাঁকে মেজর জেমস হিউইটের সন্তান প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন। উল্লেখ্য, বেআইনিভাবে তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে ডেইলি মিরর, সানডে মিরর ও সানডে পিপল-এর প্রকাশক কোম্পানি মিরর গ্রুপ নিউজপেপার্সের (এমজিএন) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন হ্যারি। এর মধ্যে ২০০২ সালে দ্য পিপল–এর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘হ্যারির ডিএনএ ছিনতাইয়ের ষড়যন্ত্র’। প্রিন্স হ্যারি বলেন, তাঁর মা প্রিন্সেস ডায়না জেমস হিউইটের সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করার পর বেশ কয়েকটি পত্রিকা হিউইটই হ্যারির আসল বাবা এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে গুঞ্জনটি যে মিথ্যা, তা পুনর্ব্যক্ত করে হ্যারি জানান, হিউইটের সঙ্গে তাঁর মা ডায়ানার সম্পর্ক তাঁর জন্মের কয়েক বছর পর শুরু হয়েছিল। হ্যারি বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৮ বছর, মাত্র ৬ বছর আগে মাকে হারিয়েছি, তখন এ ধরনের গল্পগুলো আমরা জন্য ধ্বংসাত্মক ও বাস্তব মনে হতো। এগুলো খুব কষ্টের, নিম্নরুচির ও নির্মম ছিল। আমি সব সময় ভাবতাম, এসব বলার পেছনে কারণ কী? সংবাদপত্রগুলো কি জনগণের মনে সন্দেহ তৈরি করে দিতে চায়, যাতে আমাকে রাজপরিবার থেকে বের করে দেওয়া হয়?’ আমি কি তোমার আসল বাবা, হ্যারিকে বলেছিলেন চার্লস! ‘সংবাদমাধ্যমের আগ্রাসনের’ শিকার হয়েছি আজীবন প্রিন্স হ্যারি তাঁর আত্মজীবনী স্পেয়ার–এ এসব গুঞ্জনের প্রসঙ্গ রেখেছেন। তিনি লিখেছেন, রাজা চার্লস প্রায়ই তাঁর আসল বাবা না হওয়া নিয়ে নিষ্ঠুর ও অদ্ভুত রসিকতা করতেন। গত ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত বইয়ে প্রিন্স লিখেছেন, ‘বাবা গল্প বলতে পছন্দ করতেন।.... তিনি সব সময়ই গল্প দার্শনিকতার মধ্য দিয়ে শেষ করতেন, “কে জানে, আমি কি সত্যিকারের প্রিন্স অব ওয়েলস? কে জানে আমি সত্যিই তোমার বাবা কি না?”’ এমন অদ্ভুত মজার কথা বলে তিনি শুধু হাসতেন আর হাসতেন। তখনই গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে আমার প্রকৃত বাবা হলেন আমার মায়ের সাবেক প্রেমিক মেজর জেমস হিউইট। এর একটি বড় কারণ হলো, হিউইটের চুলও ছিল লালচে। আরেকটি কারণ হতে পারে, অন্যকে মানসিক কষ্ট দিয়ে আনন্দ নেওয়া। ট্যাবলয়েডের পাঠকেরা এটা ভেবে মজা পেতেন যে প্রিন্স চার্লসের ছোট ছেলে আসলে তাঁর ছেলেই নয়।’ ইনডিপেনডেন্ট–এর তথ্যমতে, নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে যুক্তরাজ্যের সামরিক অশ্বারোহী বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা হিউইটের সঙ্গে প্রিন্স হ্যারির মা ডায়ানার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তখন অবশ্য ডায়ানা চার্লসের স্ত্রীই ছিলেন। ১৯৮৬ থেকে ৯১ সাল পর্যন্ত হিউইট ও ডায়ানার এ সম্পর্ক টিকে ছিল। অথচ প্রিন্স হ্যারির জন্ম ১৯৮৪ সালে। হিউইটের সঙ্গে ডায়ানার দেখা হওয়ার দুই বছর আগে।